মৃত্যু দুত ----
- ফেরদৌসী পারভিন | Ferdawsi Pervin
- Nov 24, 2024
- 2 min read
গতকাল জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রী ব্যাটারি চালিত রিকশার ধাক্কায় মারা গেছে। এই রিকশা ভয়াবহ। এই রিকশার জন্য রাস্তায় পায়ে হেঁটে চলা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। দু-দু-চার বছর আগেও এই রিকশা তেমন দেখতে পাওয়া যেতো না। কিন্তু এখন প্রতিদিন সংখ্যা বাড়ছেই। এই বাহনের ওপর চালকের নিন্ত্রণ নেই বল্লেই চলে। গতি থাকায় অন্যান্য প্রকৃত গতিশীল বাহন চলাচল করায় আরো বিপদজনক হয়ে উঠেছে। এই রিকশাগুলি পাড়ায় মহল্লায় চলাচল করায় সাধারণ মানুষ বিশেষকরে বাচ্চাদের জন্য ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্যাটারি ছাড়া রিকশা রাস্তায় চোখে পড়ে না। বাধ্য হয়ে কখনো চড়তে হলে ভয়ে থাকতে হয় কখন কোনকিছুর সাথে লাগিয়ে দেয় কিনা? প্যাডল চালিয়ে যে রিকশা চলে তা যথেষ্ট কায়িকশ্রমের।তবুও সেটা কিছুটা নিন্ত্রণের মধ্যে থাকে।
তাই হয়তো তারা ব্যাটারি লাগিয়েছে। কিন্তু বিপদজনক কোন বাহন রাখা যাবেনা। অবিলম্বে ব্যাটারি চালিত রিকশা বন্ধ করতে হবে।
এখানে একটি কথা বলে রাখা ভালো যে ,অধিকাংশ রিকসাওয়ালা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসে যারা কৃষিকাজে নিয়োজিত ছিল। ১৫/২০ দিন রিকশা চালিয়ে দেশে যায় আবার কয়েকদিন পর আসে। ইনকাম ভালো । তাই তাদের সংখ্যা বাড়ছেই। আমি যেহেতু রিকিশায় উঠি এবং তাদের সাথে গল্প করি তাই তাদের কাছে থেকে এইসব কথা জেনেছি। নির্ধারিত আয়ের মানুষের চেয়ে তাদের আয় অনেক বেশি ফলে উৎসাহিত হচ্ছে রিকশা চালাতে পরিনামে সংখ্যা বাড়ছে।
আমরা স্বল্প রাস্তাও হাঁটতে চাইনা বিভিন্ন কারণে। চলার পরিবেশ নাই ,অলস মানসিকতা ,যানবাহনের দৌরাত্ম্য। যানজটের অন্যতম কারণ এই রিকশা। শহর জুড়ে যদি বাসের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে রিকশার প্রয়োজন হবে। বাস থেকে নেমে হাঁটবে মানুষ। এতে শরীর চর্চাও হবে।বিপদজনক কোনকিছু প্রমোট করা যাবেনা। যেসব মানুষ কৃষিকাজ ছেড়ে চলে আসছে ফলশ্রুতিতে গ্রামে কৃষি কাজের জন্য শ্রমিক পাওয়া খুবই দূরহ হয়ে গেছে নায্য মজুরি দিয়েও।
এখানেই শেষ নয় তারা গ্রামে পরিবার রেখে এসে শহরে বস্তিতে থাকছে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে আরেকটি বিয়ে করছে। দু-দু-একটি সন্তান জন্মদানের পরবর্তীতে হঠাৎ করেই গ্রামে চলে যাচ্ছে আর ফিরছে না। তার গ্রামের কোন সঠিক ঠিকানা বস্তির স্ত্রীকে দেয়না ফলে সেই স্ত্রী বিপদের মধ্যে নিপতিত হয়। এই কাহিনী আমাদের সবার জানা।
অনেক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই ভাসমান মানুষ গুলি।
তাই সকলের নিরাপত্তার জন্য ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচল বন্ধ করা প্রয়োজন এই মূর্হতেই। যে ছাত্রীটি মারা গেছে এটিই একটা ঘটনা নয় , আরো অসংখ্য ঘটনা আছে। গতকাল আমি নিজেই মারা পড়ছিলাম সন্ধ্যেনাগাদ বাজার করে ফেরার পথে। একটি লেগুনা সহ বাসের সাথে লাগিয়ে দিয়েছিল। যদিও অনেকের কাছে এই বাহন নির্ভরতা হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নৈরাজ্যের কারণ।
প্রফেসর ফেরদৌসী পারভিন
উত্তরা
২০.১১.২০২৪
শুভ সকাল।
Comments